শেষ পর্ব : আর্থিক শৃঙ্খলা আনবার উপায় - 14 দিনের চ্যালেঞ্জ

বিশ্ববন্দিত ভ্যালু ইনভেস্টর ওয়ারেন বাফেট সাহেবের আর্থিক শৃঙ্খলার বিষয়ে 2টি গুরুত্বপূর্ণ রুল বলেছেন "Rule No. 1 is never lose money. Rule No. 2 is never forget Rule No. 1"  অর্থাৎ "নিয়ম নং 1 কখনো টাকা হারাবেন না। বিধি নং 2 কখনই নিয়ম নং 1 ভুলে যাবেন না।" এটাই আর্থিক সমৃদ্ধির শীর্ষে থাকবার মূল মন্ত্র। নিয়মিত আর্থিক লক্ষ্যগুলিতে অবিচল থাকা, বাজেট অনুযায়ী চলা, আজেবাজে খরচা না করা, ক্রেডিট কার্ডের ভরসায় কেনাকাটার প্রলোভনে না পরা, সঠিক বীমা প্রকল্পগুলিতে নিবেশ করা, অযথা বিনিয়োগের নামে ঋণের জালে না জড়ানো, এই সমস্ত পন্থা দৈনন্দিন জীবনে নিরলসভাবে অবলম্বন করলে আপনার Net worth বৃদ্ধি পেতে বাধ্য। আর্থিক সমৃদ্ধির পথে এই শৃঙ্খলা রেখে চলার সাথে সাথে আরো আনুষঙ্গিক অনেক বিষয়ই আছে যেগুলোতে মনোনিবেশ করা আবশ্যিক। যদিও 11 দিনের আর্থিক কর্মকান্ডের শেষে এসে এটা স্বীকার করে নেব যে দিনের পর দিন ফোকাস থাকাটা খুবই কঠিন। 

শেষ পর্বে এসে মনে হচ্ছে, অনেক বিষয়ই বাদ চলে গেল, সেগুলো ভবিষ্যতে ধীরে ধীরে আলোচনা করব। বাকী যে 3তে গুরুত্বপূর্ণ বিষয় বলে আমার মনে হয়েছে চলুন একে একে সেই অ্যাক্টিভিটিগুলো শেষ করা যাক। 

দ্বাদশ দিন : আমাদের দৈনন্দিন জীবনে অপ্রত্যাশিত চিকিৎসা বিল, চাকরি হারানো, আয় হ্রাস, সম্পত্তির বড় ধরনের মেরামত বা কোভিড 19 লকডাউনের মতো কোনো অর্থনৈতিক সংকটের সম্মুখীন হতে পারি, এর ফলস্বরূপ মজুদ নগদ হ্রাস হতে পারে, এমনকি দীর্ঘমেয়াদী সঞ্চয়ের লক্ষ্যে বিরূপ প্রভাব ফেলতে পারে। এটা ঠিক যে, এই সমস্ত আর্থিক জরুরী পরিস্থিতি সম্পূর্ণরূপে এড়ানো সম্ভব নাও হতে পারে, তবে তাদের জন্য প্রস্তুত থাকা উচিত। এর একমাত্র উপায় হল একটি জরুরী তহবিল তৈরি করা এবং বজায় রাখা। 


জরুরি তহবিলে 9 মাসের মতন খরচের টাকা রাখা উচিত। তবে 12 মাসের খরচের মতো বড় পরিমাণ থাকা বেশি ভালো। টাকার পরিমাণটা নির্ধারণ করার জন্য আপনাকে আপনার নিয়মিত খরচ যেমন ভাড়া, খাদ্য, ঋণের ইএমআই, বীমা পলিসি প্রিমিয়াম, আগে থেকে বিদ্যমান অবস্থার জন্য চিকিৎসা ব্যয় ইত্যাদির উপর ভিত্তি করে একটি বাজেট তৈরি করতে হবে, যেটা আপনি দ্বিতীয় দিনের অ্যাক্টিভিটিতে আগেই করে রেখেছেন। আপনার জরুরি তহবিল কর্পাস কত বড় হওয়া উচিত সেখান থেকে সহজেই গণনা করুন। এছাড়াও বিবেচনা করুন যে আপনার দায়িত্ব এবং ব্যয় আগামী দিনে কতটা বৃদ্ধির সম্ভাবনা আছে, সেইমত আপনার জরুরি তহবিলের প্রয়োজনীয়তাও বৃদ্ধি পাবে।

জরুরি তহবিলে বিনিয়োগের সবচেয়ে উল্লেখযোগ্য সুবিধা হল যে আপনি অপ্রত্যাশিত পরিস্থিতি মোকাবিলা করার জন্য ভালভাবে প্রস্তুত থাকছেন। আর্থিক জরুরী অবস্থা যে কোন সময় দেখা দিতে পারে, সেইসময় জরুরী অবস্থা মোকাবিলা করার মত পর্যাপ্ত সম্পদ না থাকলে আপনাকে বেশি সুদে ব্যক্তিগত ঋণ নিতে হবে বা ক্রেডিট কার্ডের (নবম দিনের চ্যালেঞ্জ) শরণাপন্ন হতে হবে অথবা আপনার দীর্ঘমেয়াদী বিনিয়োগগুলিকে অকালে ভেঙে ফেলতে হবে, এর ফলস্বরূপ আপনার আর্থিক পরিকল্পনা সম্পূর্ণ লক্ষ্যচ্যুত হবে।  

বছরের মধ্যে একটি নির্দিষ্ট সময় থাকে যখন আপনি কিছু অতিরিক্ত অর্থ পান। যেমন কর্মক্ষেত্রে বোনাস প্রাপ্তি, চাকরি পরিবর্তনের জন্য গ্র্যাচুইটি পে-আউট, ট্যাক্স রিফান্ড, পুরানো ফিক্সড ডিপোজিটের মেয়াদপূর্তি ইত্যাদি। এই অতিরিক্ত বা একটি অংশ সঞ্চয় করতে পারলে দ্রুত আপনি জরুরি তহবিলের লক্ষ্যে পৌঁছাতে পারবেন। 

আপনার জরুরি তহবিলের বিনিয়োগের বিকল্প বেছে নেওয়ার সময় আপনাকে 2টি দিক বিবেচনা করতে হবে - নিরাপত্তা এবং তারল্য। অপেক্ষাকৃত কম ঝুঁকিপূর্ণ এবং সহজে নগদে রূপান্তর হবার বিনিয়োগ মাধ্যম যেমন ব্যাংকের সেভিংস অ্যাকাউন্ট, ফিক্সড ডিপোজিট, রেকারিং ডিপোজিট, তরল মিউচুয়াল তহবিল (Liquid Mutual Fund), অতি-স্বল্প মেয়াদী তহবিল (Ultra Short Term Fund), মানি মার্কেট ইন্সট্রুমেন্ট (Money Market Instrument) ইত্যাদিতে আপনার জরুরি তহবিলের অর্থ রাখুন। 

ফিক্সড ডিপোজিট বা রেকারিং ডিপোজিট-এর সঞ্চয়ের মূল সীমাবদ্ধতা হল এটি অকাল প্রত্যাহারকালে (Pre Maturity) আপনাকে জরিমানা দিতে হবে এবং প্রতি বৎসরান্তে সুদের আয়ের নির্দিষ্ট সীমার উপরে আয়কর গুণে যেতে হবে। এর বিকল্প বিনিয়োগ মাধ্যম হল ঋণ মিউচুয়াল ফান্ড (Debt Mutual Fund)। যদিও এগুলি স্থির রিটার্ন বিনিয়োগের তুলনায় সম্ভাব্য ঝুঁকিপূর্ণ হতে পারে, কিন্তু এই স্কিমগুলি স্থির-রিটার্ন বিনিয়োগের তুলনায় উচ্চতর রিটার্ন অফার করে এবং উচ্চ মাত্রার তারল্যও থাকে আর সহজেই জরুরী অবস্থায় কোনো জরিমানা ছাড়াই তুলতে পারেন। ঋণ/ডেট মিউচুয়াল ফান্ডে Redemption বা ইউনিট বিক্রি যে বছর করবেন, সেই বছরে আয়কর হিসাবে Short Term Capital Gain (STCG) অথবা Long Term Capital Gain (LTCG) প্রযোজ্য হবে। 

ত্রয়োদশ দিন : দ্বিতীয় দিনে বাজেট বানানোর সময় 50/30/20 নিয়মের সাথে পরিচিত করিয়েছিলাম, সেটা ছিল ক্লাসিক বাজেটিং নিয়ম যা আপনাকে আপনার আয়ের 50% প্রয়োজনের জন্য, 30% চাহিদার জন্য এবং 20% সঞ্চয় করা উচিত লিখেছিলাম। কিন্তু আপনি যদি সমৃদ্ধিশালী, অর্থবান বা  যথেষ্ট সম্পদের মালিক হতে চান তাহলে আপনাকে বিকল্প অনুপাতের পরামর্শ দেব। আজকের অ্যাক্টিভিটিটি শুধুমাত্র তাদের জন্য উপযুক্ত যারা বিত্তবান হবার মনবাসনা রাখেন। 

নিয়মটি 40:40:20 যা সামগ্রিক সম্পদ তৈরির সূত্রের অংশ। 40/40/20 নিয়মটিতে, 40% আয়কর ও অন্যান্য খরচের জন্য আলাদা করা উচিত, 40% সংরক্ষণ করা উচিত শুধুমাত্র সঞ্চয় ও বিনিয়োগের জন্য এবং বাকি 20% থেকে আপনার দৈনন্দিন বা মাসিক খরচা চালানো উচিত।

এই সূত্র অনুযায়ী ততক্ষণ পর্যন্ত আপনাকে আয় এবং সঞ্চয় বৃদ্ধি করে যেতে হবে যতক্ষণ না আপনি আয়-উৎপাদনকারী সম্পদগুলিতে বিনিয়োগ করার সামর্থ্য পান। তারপর, আবার আয়-উৎপাদনকারী সম্পদগুলির লাভ ব্যবহার করে আরও আয়-উৎপাদনকারী সম্পদগুলিতে বিনিয়োগ করতে হবে আপনার সম্পদ বৃদ্ধির জন্য। জটিল হয়ে গেল। সোজা ভাবে বললে সঞ্চয় করি আমরা ফিক্সড ডিপোজিট বা ডেট ফান্ড জাতীয় কিছুতে, সেখান থেকে প্রাথমিক আয়-উৎপাদনকারী সম্পদে বিনিয়োগ করতে হবে উদাহরস্বরূপ ইকুইটি মিউচুয়াল ফান্ডে আর তার লাভের ভাগ নিয়ে যদি আবার ইনভেস্টমেন্ট করতে হয় তবে শেয়ারে বিনিয়োগ করতে হবে। সূত্রটি বোঝানোর জন্য একটা উদাহরণ দিলাম মাত্র। অবশ্যই ব্যাক্তি বিশেষে এই পদ্ধতি পরিবর্তনশীল।
 
আপনি আপনার মোট আয়ের 40% যদি সঞ্চয় করেন এবং তা বিনিয়োগের জন্য ব্যবহার করেন - বেঁচে থাকার জন্য নয় - এটা খুব জোর গলায় বলা যায় যে আপনি নিজের জন্য সম্পদ তৈরি করবেন। 

আপনার মোট আয়ের মাত্র 20% দৈনন্দিন বা মাসিক খরচা করে জীবনযাপন চালানো আপনাকে অযৌক্তিক খরচ থেকে বিরত রাখবে, বিশেষ করে যখন আপনি একটি বড় বেতন উপার্জন শুরু করেন। এই নিয়ম মেনে চলা কঠিন বলে মনে হতে পারে, বিশেষ করে যদি আপনি উচ্চ বেতন না পান। অনেকেই ভাবছেন, এটি অসম্ভব কিন্তু আপনাকে 20% খরচ করে বাঁচতে হবে। কঠিন হবে ঠিকই, তবে এটি আপনাকে আরও উপার্জন করতে উত্সাহিত করবে। এটি আপনাকে আরও আয়ের জন্য সৃজনশীল উপায় (সপ্তম দিনের অ্যাক্টিভিটি) খুঁজে বের করতে বাধ্য করবে। সমৃদ্ধশালী হতে গেলে আপনার আয়ের 40% প্রতিমাসে সঞ্চয় করতেই হবে। 

চতুর্দশ এবং শেষ দিন :গোপনীয়তা এবং অনলাইন নিরাপত্তাকে গুরুত্ব সহকারে নেওয়া শুরু করুন। অনেক বিষয়কে সরিয়ে রেখে এই বিষয়টাকে আজকের যুগে গুরুত্ব দিতে বাধ্য হলাম তার কারণ এটাই এই সময়ের সবচেয়ে জটিল সমস্যা। অগণিত ডেটা লঙ্ঘন এবং আর্থিক কেলেঙ্কারীগুলি প্রায় প্রতিদিনই ঘটছে, আপনার আর্থিক এবং ব্যক্তিগত ডেটা সক্রিয়ভাবে সুরক্ষিত করা অপরিহার্য। আপনার একটু অসাবধনটা বড় বিপদ ডেকে আনতে পারে আপনার আর্থিক এবং পারিবারিক জীবনে। এটি করার জন্য বেশ কিছু বিষয়ে আপনাকে সতর্ক থাকতে হবে প্রতিদিন:

1. বেশ কিছুদিন থেকেই আধার এনাবেল পেমেন্ট সিস্টেম (AEPS) মোডে টাকা উঠে যাচ্ছে ব্যাঙ্ক অ্যাকাউন্ট থেকে। কিন্তু গ্রাহকরা কোনও কিছু বুঝতে পারছেন না। আঙুলের ছাপ ব্যবহার করে ব্যাঙ্কিং অ্যাকাউন্ট চেক করা, নগদ অর্থ তোলার ব্যাঙ্কিং পরিষেবাকে AEPS বলে। ব্যাঙ্কিং একাউন্টে আধার লিঙ্ক থাকায় এই জালিয়াতিটা হচ্ছে। উপায় একটাই, আধারের বায়োমেট্রিক লক করুন। 'এম আধার' (m-Aadhaar) অ্যাপ ডাউনলোড করে আধার বায়োমেট্রিক লক করে দিন।  


2. কেওয়াইসি (Know Your Customer) জমা দেওয়ার সময় শেষ চারটি নম্বর ছাড়া আধার কার্ডের বাকি অংশ পেন দিয়ে এমন ভাবে কেটে দিন যাতে পড়া না যায়। 

3. ব্যাঙ্ক থেকে টাকা উধাও হলে ২৪ ঘণ্টার মধ্যেই সংশ্লিষ্ট ব্যাঙ্কের কাছে অভিযোগ জানান। এর সাথে স্থানীয় থানা বা সাইবার ক্রাইম থানায় অভিযোগ দায়ের অবশ্যই করবেন। তাহলে আপনার চুরি যাওয়া টাকা ফেরৎ আসবার কিঞ্চিত সম্ভাবনা থাকবে। 

4. ভেরিফিকেশন বা যাচাই না করে কোনও প্ল্যাটফর্মে একাধিকবার বায়োমেট্রিক দেবেন না। কারণ একাধিক ঘটনায় দেখা গিয়েছে যে মেশিন বুঝতে পারছে না বলে দাবি করে একাধিকবার সংশ্লিষ্ট ব্যক্তির ফিঙ্গারপ্রিন্ট নিয়ে নেওয়া হয়। পরবর্তীকালে সেই ফিঙ্গারপ্রিন্ট ব্যবহার করে জালিয়াতি করা হয় বা ব্যাঙ্ক অ্যাকাউন্ট থেকে টাকা গায়েব করে দেওয়া হয়। আঙুল ভেজা থাকলে বা আঙুলে তেল থাকলে 'আধার এনেবেলড পেমেন্ট সিস্টেম'-এ আঙুলের ছাপ দেবেন না। 

5. অযাচিত ইমেল, মেসেজ বা ফোন কল থেকে সতর্ক থাকুন। কোনরকম অচেনা বা সন্দেহজনক লিঙ্কে ক্লিক করবেন না। এর থেকে আর্থিক প্রতারণার ঘটনা ঘটতে পারে। আবার আপনার অজান্তে ওই লিঙ্কের মধ্যে দিয়ে আপনার মোবাইল ফোন বা কম্পিউটারের দখল নিয়ে নিতে পারে প্রতারকরা। আপনার সব রকমের কার্যকলাপ রেকর্ডিং করে নিয়ে আপনাকে আর্থিক ভাবে অথবা ব্যক্তিগতভাবে গোপন তথ্য, ছবি, ভিডিও হাতিয়ে ব্ল্যাকমেল করতে পারে। 

কোনও ওয়েবসাইট যাচাই না করে তাতে ক্লিক করবেন না। ডোমেইন (Domain) নাম থেকে শুরু করে, ওয়েবসাইটে দেওয়া ফোন নম্বর, ইমেল আইডি, ইত্যাদি ভাল করে চেক করুন।

6. অচেনা অপরিচিত কোন ব্যক্তির থেকে কোন কিউআর কোড স্ক্যান করবেন না।  

7. লটারি বা অন্য কোন প্রলোভন এড়িয়ে চলুন, লটারিতে টাকা জেতার নাম করে আর্থিক প্রতারণার ঘটনা ঘটছে আকছার। আবার অমুক কোম্পানীর 10 বছরের পূর্তি, তমুক কোম্পানীর 100 বছরের অফার উপলক্ষে 5টি গ্রুপে শেয়ার করার নামে লুট চলছে। 

ভারতে প্রথমবার তৈরি হয়েছে বলে Apple কোম্পানী এত আনন্দিত হয়েছে, যে পাঁচজনকে সম্পূর্ণ বিনামূল্যে iPhone 15 দেওয়া হবে। একাধিক ভাইরাল মেসেজে দাবি করা হচ্ছিল ফ্রী iPhone 15, শেয়ার করুন আর জিতুন। মেসেজটিতে একটি করে লিঙ্ক দেওয়া হচ্ছিল। আপনি সেই লিঙ্কে ক্লিক করলেই আপনাকে লুঠ করা শুরু। এইরকম সব নিত্যনতুন গরম গরম খবরগুলোকে জালিয়াতেরা হাতিয়ার করে লুঠের। 

ইলেকট্রিসিটি বিল পেমেন্ট নিয়েও একাধিক জালিয়াতি হয়েছে। কখনও লিঙ্কে ক্লিক করে সরাসরি ইলেকট্রিক বিল পেমেন্ট করার মেসেজ, কখনও আবার বিদ্যুৎ বিল পরিশোধ সংক্রান্ত জরুরি বার্তা। এই সব মেসেজে বলা হয়, আপনি ইলেকট্রিক বিল পেমেন্ট না করলে আপনার কানেকশন কেটে দেওয়া হতে পারে। এই ধরনের মেসেজ কখনওই বিশ্বাস করবেন না। 

8. OTP অর্থাৎ ওয়ান-টাইম পাসওয়ার্ড জালিয়াতি পুরোনো পদ্ধতি কিন্তু জালিয়াতরা নতুন নতুন গল্প বা ফাঁদ পাতছে। সাধারণ মানুষের কাছ থেকে অত্যন্ত কৌশলে স্ক্যামাররা OTP নিয়ে নেয়। তারপর সেটিকে টু-ফ্যাক্টর অথেন্টিকেশন হিসেবে ব্যবহার করে। আপনি যদি আপনার ফোনে আসা OTP কাউকে দেন, তাহলেই আপনার ব্যাঙ্ক অ্যাকাউন্ট খালি হয়ে যেতে পারে। যেমন আপনি অপরিচিত কোনও ওয়েবসাইট বা মোবাইল apps ডাউনলোড করার সময় আপনার Cookies একসেস করার অনুমতি দিয়ে দেন। আপনি যা কিছু খোঁজাখুজি করছেন সব histroy-তে থেকে যাচ্ছে, সেখান থেকে প্রতারকেরা আপনার মানসিকতা জেনে যাচ্ছে। সেই অনুযায়ী তারা প্রতারণার প্ল্যান করে। 

9. UPI মানি রিকোয়েস্ট ফ্রডও হালফিলে প্রতারণার অত্যন্ত সাধারণ একটা ধরন। এর মাধ্যমে স্ক্যামাররা সাধারণ মানুষের কাছে মানি রিকোয়েস্ট পাঠায়, যা ভুয়ো কিন্তু বাস্তব বলে মনে হয়। অর্থাৎ আপনাকে ছোট্ট একটা কাজ করতে হবে, আর তার বদলে আপনি মোটা টাকা রোজগার করবেন, ঠিক এমনতর টোপ। তারপরে স্ক্যামাররা আপনাকে ফোন করে রিকোয়েস্টের প্রক্রিয়াটি সম্পূর্ণ করতে বলে। আপনি প্রতারকের ফাঁদে পা দিলেই সব শেষ।

10. অনেক সময় আমরা এমন কিছু কল পেয়ে থাকি, যেখানে আমাদের ফাঁদে ফেলার জন্য ব্যক্তিগত এবং আর্থিক তথ্য চাওয়া হয়। প্রতারকরা ফোন করে বলে, কিছু সন্দেহজনক কার্যকলাপের জন্য আপনার ব্যাঙ্ক অ্যাকাউন্ট ডিঅ্যাক্টিভেট করা হয়েছে। আর তখন আপনি ভয় পেয়ে নিজেদের ব্যাঙ্কিং তথ্য প্রতারকের কাছে শেয়ার করে দেন। সেখান থেকে আপনাকে কিছু ভুয়ে ওয়েবসাইটে নিয়ে যাওয়া হতে পারে, কখনও আবার সরাসরিই আপনার তথ্য কাজে লাগিয়ে আপনাকে বিপদে ফেলতে পারে প্রতারকরা।

এরই আর একটা দিক হল, KYC আপডেটের নামে প্রতারকরা ব্যাঙ্কের ম্যানেজারের ভেক ধরে ফোনে বলে, কেওয়াইসি আপডেট করা হয়নি অতএব আপনার ব্যাঙ্ক অ্যাকাউন্ট ডিঅ্যাক্টিভেট করা হয়েছে। এপরপরই আপনি ভয় পেয়ে আপনার বিভিন্ন তথ্য শেয়ার করে দেবেন। ব্যস! তারপর আর দেখে কে!

11. কোনও অচেনা নাম্বার থেকে ভিডিও কল এলে ধরবেন না। বহু ক্ষেত্রে লক্ষ্য করা যায় অচেনা নম্বর থেকে ভিডিও কল আসছে। সেই কল রিসিভ করার পর দেখা যায় অপর প্রান্তে থাকা ব্যক্তি অশ্লীল মুহূর্ত তুলে ধরছে। তারপর সেই ভিডিও কল ওই ব্যক্তি রেকর্ডিং করে টাকা পয়সা দাবি করে।

12. সিকিওরিটি প্যাচ এবং অ্যান্টিভাইরাস সফ্টওয়্যার দিয়ে আপনার কম্পিউটার, স্মার্টফোন এবং অন্যান্য ডিভাইস আপডেট রাখুন।

উপরের প্রত্যকটা বিষয়ে প্রতিনিয়ত আপনাকে সাবধান থাকতে হবে, এই রকম আরও অনেক প্রতারণার জাল ছড়ানো কারণ আছে, সব লেখা সম্ভব হল না সময়ের অভাবে।  আপনাদের যদি মনে হয় এই বিষয়ে আরো লেখা দরকার আছে কমেন্ট বক্সে জানান। চেষ্টা করব আবার বড় আকারে এই বিষয়ের উপর লিখতে।  

14 দিনের অ্যাক্টিভিটি শেষ। প্রত্যেকটা বিষয় অনেকবার ভেবে-চিন্তে তবে নির্বাচন করেছি। শেষ হবার পর মনে হচ্ছে আরও বেশি সময় হলে ভালই হত। সর্বোপরি আপনি কোনও উপকার পেলেন কি ? জানান কমেন্ট বক্সে, আর শেয়ার করতে ভুলবেন না কিন্তু। 

আপনি যদি নতুন হোন আমাদের এই ব্লগের পাতাতে তাহলে আগের 4টে লেখা অবশ্যই পড়ে নিন নীচের লিঙ্কগুলোতে ক্লিক করে :


আমাদের এই পোস্টটি ভালো লেগেছে ? ভবিষ্যতের পোস্টগুলি মিস না করার জন্য অনুসরণ করুন । 

Disclaimer:

মিউচুয়াল ফান্ড বিনিয়োগ বাজারের ঝুঁকির সাপেক্ষে, সমস্ত স্কিম সম্পর্কিত নথি সাবধানে পড়ুন। স্কিমগুলির NAVগুলি সুদের হারের ওঠানামা সহ সিকিউরিটিজ বাজারকে প্রভাবিত করে এমন কারণ এবং শক্তিগুলির উপর নির্ভর করে উপরে বা নীচে যেতে পারে। মিউচুয়াল ফান্ডের অতীত কর্মক্ষমতা স্কিমগুলির ভবিষ্যত কর্মক্ষমতা নির্দেশ করে না। মিউচুয়াল ফান্ড কোনও স্কিমের অধীনে কোনও লভ্যাংশের নিশ্চয়তা বা নিশ্চয়তা দেয় না এবং এটি বিতরণযোগ্য উদ্বৃত্তের প্রাপ্যতা এবং পর্যাপ্ততার সাপেক্ষে। বিনিয়োগকারীদের প্রসপেক্টাসটি সাবধানে পর্যালোচনা করার জন্য এবং স্কিমে বিনিয়োগ/অংশগ্রহণের সুনির্দিষ্ট আইনি, কর এবং আর্থিক প্রভাব সম্পর্কে বিশেষজ্ঞ পেশাদার পরামর্শ নেওয়ার জন্য অনুরোধ করা হচ্ছে।


একটি মন্তব্য পোস্ট করুন

0 মন্তব্যসমূহ